কখনও কি ইন্টারনেটে এমন কাউকে দেখেছেন যে খুব অল্প বয়সেই দামি গাড়ি চালাচ্ছে, আর মনে মনে ভেবেছেন, "ওরা কীভাবে পারল?" আপনি কি চান যে আপনার অনেক টাকা পয়সা হোক, তবে বুড়ো বয়সে নয়, বরং যখন আপনি জোয়ান, শরীরে অনেক শক্তি আর দুনিয়া ঘোরার শখ? যদি ৪০-৫০ বছর ধরে শুধু চাকরি করে আর তারপর হয়তো আরামে রিটায়ার করার চিন্তাটা আপনার কাছে একটা লম্বা সাজার মতো মনে হয়, তাহলে এই লেখাটা আপনার জন্যই। আজ আমরা এমন একটা বিষয় নিয়ে কথা বলব যা টাকা-পয়সা জমানোর ব্যাপারে আপনার সব চিন্তা বদলে দিতে পারে: তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তা (Millionaire Fastlane)। এটা কোনও রাতারাতি বড়লোক হওয়ার গল্প নয়; বরং জীবনের অনেক আগেই অনেক টাকার মালিক হওয়ার একটা বুদ্ধিদীপ্ত, দ্রুত পথ। শুধু স্বপ্ন দেখলে হবে না; আসুন, জানি কীভাবে এটা সত্যি করা যায়।
এই "তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তা" জিনিসটা কী?
তাহলে, এই যে বলছি "তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তা", এটা আসলে কী? এমজে ডিমার্কো নামে একজন লেখক এই বুদ্ধিটা দিয়েছেন। এটা আসলে টাকা জমানোর এমন একটা চিন্তা আর কৌশল যেখানে নিজের ব্যবসা আর এমন কিছু সিস্টেম তৈরির উপর জোর দেওয়া হয় যা নিজে নিজেই বাড়তে পারে। ভাবুন, এটা যেন বড়লোক হওয়ার একটা সোজা, চওড়া হাইওয়ে, যা কিনা ওই ধীরগতির, পুরনো আমলের রাস্তা থেকে একদম আলাদা।
ধরুন, আপনাকে 'ক' জায়গা (আপনার এখনকার আর্থিক অবস্থা) থেকে 'খ' জায়গায় (অনেক টাকার মালিক) যেতে হবে।
আপনি চাইলে হেঁটে যেতে পারেন। এতে পয়সা লাগবে না, কিন্তু অনেক সময় লেগে যাবে, আর 'খ' জায়গার কাছাকাছি যাওয়ার আগেই হয়তো আপনি হাঁপিয়ে যাবেন। এটা হলো যাদের টাকা জমানোর কোনও পরিকল্পনাই নেই, তাদের মতো।
তারপর আছে সাইকেল – একটু তাড়াতাড়ি, একটু খাটুনি লাগে আর একটা জিনিসও (সাইকেল) লাগে, কিন্তু 'খ' জায়গা যদি অনেক দূরে হয়, তাহলেও এটা একটা লম্বা, কষ্টের যাত্রা। এটা অনেকটা সেই পুরনো ভাবনার মতো, "অল্প অল্প জমাও, অন্যের জন্য খেটে যাও।"
কিন্তু যদি একটা গাড়ি বা একটা খুব স্পিডের ট্রেন থাকত? তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তাটা হলো সেই স্পিডের গাড়ি খুঁজে বের করা, বা নিজেই তৈরি করে নেওয়া। আসল কথাটা হলো, আপনি টাকা রোজগারের জন্য যে ব্যবস্থা ব্যবহার করছেন, সেটাই ঠিক করে দেবে আপনি কত তাড়াতাড়ি আর কত বেশি টাকার মালিক হবেন। এটা হলো নিজের আর্থিক কিসমতের ড্রাইভার হওয়া, শুধু যাত্রী নয়।
কেন আপনার এই তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তায় যাওয়া উচিত?
আপনি হয়তো ভাবছেন, "শুনতে তো ভালোই লাগছে, কিন্তু এত তাড়াহুড়োর কী আছে? আস্তে ধীরে গেলেই তো জেতা যায়, তাই না?" দেখুন, যখন আপনার জীবন আর টাকা-পয়সার কথা আসে, তখন সময় হলো এমন একটা জিনিস যা আপনি আর কখনও ফেরত পাবেন না। আমি কিছুদিন আগে যে লেখাটা পড়ছিলাম, সেখানে খুব দুঃখ করে বলা হয়েছে: ৬০ বা ৭০ বছর বয়সে, যখন আপনার "এক পা কবরে," তখন যদি সারা দুনিয়ার টাকাও আপনার কাছে থাকে, আর আপনি সেটা ভোগই করতে না পারলেন, তাহলে সেই টাকার দাম কী?
তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার আসল লাভ শুধু টাকা জমানো নয়; বরং আপনার সময় বাঁচানো আর স্বাধীনতা পাওয়া, যখন আপনি জোয়ান আর জীবনটাকে পুরোপুরি উপভোগ করার জন্য তৈরি।
ধরুন রিনা, একজন খুব ভালো গ্রাফিক ডিজাইনার, বয়স ২৯। সে একটা নামকরা অফিসে কাজ করে, ভালো মাইনে পায়, আর প্রতি মাসে ১৫% টাকা জমায়। তার প্ল্যান? ৬২ বছর বয়সে রিটায়ার করা। এটাই হলো সেই পুরনো "ধীরগতির রাস্তা"।
এবার ভাবুন সুমনের কথা, বয়স ২৯, রিনার পুরনো সহকর্মী। সে দেখল যে ছোটখাটো ব্যবসার জন্য কম দামে, ভালো মানের ডিজাইনের একটা অভাব আছে। সে এক বছর ধরে একটা অনলাইন ওয়েবসাইট তৈরি করল, যেখানে কিছু টাকা দিয়ে এই ডিজাইনগুলো কেনা যায়। প্রথম বছরটা খুব কষ্টের ছিল, অনেক রাত জেগে কাজ করতে হয়েছে আর চিন্তা ছিল। কিন্তু এখন, তার ওয়েবসাইট থেকে দিনরাত টাকা আসছে, যার জন্য তাকে সারাক্ষণ বসে থাকতে হয় না। সুমন শুধু রিনার চেয়ে বেশি টাকা কামাচ্ছে না; তার নিজের সময় আর টাকা-পয়সার ভবিষ্যতের উপর তার অনেক বেশি দখল। সে আছে তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তায়।
এই রাস্তাটা সবার জন্য নয়—এর জন্য অন্যরকম খাটুনি, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস আর অন্যরকম চিন্তাভাবনা লাগে। কিন্তু এর যে লাভ, বিশেষ করে নিজের মতো করে জীবন কাটানো আর তাড়াতাড়ি স্বাধীনতা পাওয়া, সেটা অনেক বড়। এটা এমন একটা জীবন তৈরি করা, যেখানে আপনার টাকা আপনার জন্য কাজ করে, আপনি টাকার জন্য নয়।
টাকা জমানোর তিনটে রাস্তা: আপনি কোনটায় আছেন?
তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার ক্ষমতা ঠিকঠাক বুঝতে হলে, বেশিরভাগ লোক না জেনেই যে অন্য রাস্তাগুলো ধরে, সেগুলো সম্পর্কে জানা দরকার, যেমনটা ডিমার্কোর বইতে বলা হয়েছে:ফুটপাথ: আজকের জন্য বাঁচো, কাল গরিব হও
যারা এই ফুটপাথে চলে, তারা আসলে টাকা-পয়সার ব্যাপারে কোনও চিন্তাই করে না। তাদের কথা হলো "জীবন তো একটাই, যা করার আজই করে নিই," কিন্তু এর মানে তারা করে "যা টাকা আছে সব উড়িয়ে দাও।" তারা মাস গেলে যা পায়, তাতেই চলে (যদি আদৌ মাসে মাসে টাকা পায়), যা ভালো লাগে সঙ্গে সঙ্গে কিনে ফেলে, আর প্রায়ই ধার করে নিজেদের শখ মেটায়। টাকা জমানোর প্ল্যান? সে সব কিছুই নেই। আমি যে লেখাটা দেখেছিলাম, সেখানে এমন লোকের কথা বলা হয়েছে যারা "বন্ধুদের নিয়ে খুব মজা করে, সব টাকা শেষ করে ফেলে, আর তারপর মাসের বাকি দিন ধার করে চলে।"
এটা শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নয়; কখনও কখনও এটা টাকা-পয়সার জ্ঞান না থাকার কারণে বা 'আমার দ্বারা বড়লোক হওয়া সম্ভব নয়' এই ভাবনা থেকেও হয়। কিন্তু এর ফল প্রায় সবসময়ই হয় ভবিষ্যতে টাকার চিন্তা আর অন্যের উপর ভরসা করে চলা।
ধীরগতির রাস্তা: দেরিতে বড়লোক হওয়ার 'নিরাপদ' পথ
এই পথেই আমাদের বেশিরভাগকে চলতে শেখানো হয়: পড়াশোনা করো, ভালো চাকরি পাও, ৪০-৫০ বছর খুব খাটো, মন দিয়ে টাকা জমাও (হয়তো মাইনের ১০-১৫%), "নিরাপদ" জায়গায় টাকা রাখো যেমন ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট বা মিউচুয়াল ফান্ড, আর আশা করো বুড়ো বয়সে আরামে থাকতে পারবে। স্ক্রিপ্টে ঠিকই বলা হয়েছে যে এই পথের অনেকের মাইনের বেশিরভাগ টাকাই বাড়ি ভাড়া, ছেলেমেয়ের খরচ আর মাসের বাজারের পিছনে চলে যায়, বড়লোক হওয়ার মতো তেমন কিছুই আর হাতে থাকে না।
যদিও ফুটপাথের চেয়ে এটা অনেক ভালো আর দায়িত্বশীল পথ, ধীরগতির রাস্তা আসলে আপনার সময়ের বদলে টাকা দেয়। আপনার আয় মূলত আপনি কত ঘণ্টা কাজ করছেন তার উপর নির্ভর করে, আর আপনার টাকা জমাটা খুব আস্তে আস্তে বাড়ে। আমার এক গুরু বলতেন, "চাকরি হলো অন্য কারোর তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার একটা সমাধান!" এটা একটা লম্বা খেলা, আর সত্যিকারের আর্থিক স্বাধীনতা প্রায়শই বুড়ো বয়স পর্যন্ত একটা দূরের স্বপ্নই থেকে যায়।
তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তা: নিজের চেষ্টায় ধনী হওয়া, ভাগ্যের ভরসায় নয়
তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তা হলো সেই জায়গা যেখানে খুব দ্রুত টাকা জমানো যায়। এটা আপনার চাকরির পদের উপর বা আপনি মাইনে থেকে কত টাকা জমাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে না; এটা হলো এমন সিস্টেম আর ব্যবসা তৈরি করা যা নিজে নিজেই বাড়তে পারে। এই রাস্তার লোকেরা প্রথমে কিছু তৈরি করে, তারপর সেটা ভোগ করে। তারা এমন জিনিস তৈরির উপর জোর দেয় যা তাদের সরাসরি সময় না দিলেও অনেক টাকা এনে দিতে পারে। তারা সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে আর সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে জানে। স্ক্রিপ্টে যে ল্যাম্বরগিনিওয়ালা কমবয়সী ছেলেটার কথা বলা হয়েছিল, তার কথা ভাবুন – সে মূল্যবান কিছু তৈরি করেছিল। সে শুধু অফিস টাইমে কাজ করেনি। এই পথের জন্য ব্যবসার বুদ্ধি, হিসেব করে ঝুঁকি নেওয়ার সাহস আর લોકોને দারুণ কিছু দেওয়ার মানসিকতা লাগে।
তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তায় ওঠার জন্য মনের আর কাজের কিছু জরুরি বদল
তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তায় যাওয়া শুধু আপনি কী করেন তার উপর নয়; বরং আপনি কীভাবে ভাবেন তার উপরও নির্ভর করে। এই রাস্তার কিছু জরুরি নিয়ম নিচে দেওয়া হলো যা আপনি মনে গেঁথে নিতে আর কাজে লাগাতে পারেন:
১. সময়কে সোনার চেয়েও দামি মনে করুন (এমনকি তার চেয়েও বেশি!)
এটা সবচেয়ে জরুরি। ধীরগতির রাস্তার লোকেরা সময়ের বদলে টাকা পায়। তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার লোকেরা বোঝে যে সময় তাদের সবচেয়ে দামি জিনিস, যা একবার গেলে আর ফেরে না। টাকা হারালে আবার কামানো যায়; সময় হারালে আর পাওয়া যায় না। আপনার জীবনের এক ঘণ্টার দাম কত? সেটা কি এমন কাজে যাচ্ছে যা আপনার সম্পদ বাড়াচ্ছে, নাকি শুধু মাইনের জন্য খাটছেন?
কাজের কথা: এক সপ্তাহের জন্য আপনার সময়ের একটা "হিসেব" করুন। কত ঘণ্টা আপনি জিনিসপত্র কেনা বা ব্যবহার করার (সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি) পিছনে দিচ্ছেন আর কত ঘণ্টা নতুন কিছু তৈরি করার (নতুন কিছু শেখা, নিজের কোনও ছোটখাটো কাজ করা, দরকারি লোকের সাথে মেশা) পিছনে?
২. শুধু খরিদ্দার নয়, উৎপাদক হোন
আমাদের চারপাশের সবকিছুই আমাদের জিনিস কিনতে উৎসাহিত করে। তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার লোকেরা এই খেলাটা উল্টে দেয়। শুধু জিনিস আর সেবা কেনার বদলে, তারা সেগুলো তৈরি করার কথা ভাবে। তারা সমস্যা খুঁজে বের করে তার সমাধান করতে চায়, লোকের দরকার মেটাতে চায়, বা মানুষের জীবনে ভালো কিছু যোগ করতে চায়। আপনি যে প্রত্যেকটা জিনিস ব্যবহার করেন, প্রত্যেকটা সেবার জন্য যে টাকা দেন, সেটা সম্ভবত অন্য কারোর তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার অংশ।
কাজের কথা: পরের বার যখন কোনও জিনিস বা সেবা নিয়ে আপনার রাগ হবে, শুধু নালিশ না করে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন: "এটা কীভাবে আরও ভালো করা যেত? এখানে কি এমন কোনও দরকার আছে যা আমি পূরণ করতে পারতাম?"
৩. এমন আয়ের উৎস তৈরি করুন যা নিজে নিজেই বাড়ে (প্যাসিভ ইনকাম)
এখানেই তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার আসল মজা। প্যাসিভ ইনকাম মানে আপনার টাকা আর সরাসরি আপনি কত ঘণ্টা কাজ করছেন তার সাথে যুক্ত নয়। আপনি একবার একটা জিনিস বা সিস্টেম তৈরি করেন, আর সেটা সামান্য চেষ্টাতেই 계속 (কোরিয়ান ভাষায় 'ক্রমাগত') টাকা এনে দিতে থাকে। যেমন একটা বই লেখা, একটা অনলাইন কোর্স তৈরি করা, সফটওয়্যার বানানো, একটা জনপ্রিয় ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা (যেমন স্ক্রিপ্টে বলা হয়েছে), বা ভাড়াবাড়ি কেনা। আসল কথা হলো জিনিসটা কতটা বাড়ানো যায় (scalability) – আপনার সিস্টেম কি ১০, ১০০, বা ১০,০০০ লোককে মোটামুটি একই বা সামান্য বেশি চেষ্টায় সেবা দিতে পারবে?
কাজের কথা: আপনার এমন তিনটে শখ বা দক্ষতার তালিকা বানান। সেগুলোর মধ্যে একটাকে কীভাবে এমন কোনও জিনিস বা সেবায় बदला (হিন্দিতে 'পরিবর্তন করা') যায় যা প্যাসিভ আয় এনে দিতে পারে? এই মাসে একটা ভালো আইডিয়া নিয়ে খোঁজখবর করুন।
ছবি ২: এখানে একটা ছবি দিন। একদিকে লেখা "অ্যাক্টিভ ইনকাম: সময় = টাকা" আর একটা লোক খাঁচায় ইঁদুরের মতো চাকা ঘোরাচ্ছে। অন্যদিকে লেখা "প্যাসিভ ইনকাম: জিনিস -> টাকা" আর একটা লোক আরাম করছে আর তার ল্যাপটপ, বই, বাড়ির চিহ্ন থেকে টাকা বেরোচ্ছে।
৪. লাভের টাকা আবার ব্যবসায় লাগান: আপনার টাকাকে আপনার জন্য কাজ করান
তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার লোকেরা শুধু টাকা কামায় না; তারা সেই টাকাকে আরও বেশি টাকা কামানোর জন্য কাজে লাগায়। স্ক্রিপ্টে খুব সুন্দর একটা কথা বলা হয়েছে "মাছের তেল দিয়ে মাছ ভাজা"। এর মানে হলো আপনার ব্যবসা থেকে যা লাভ হবে, তার একটা বড় অংশ আবার ব্যবসার উন্নতিতে, নতুন জিনিস কিনতে, বা অন্য কোনও তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার সুযোগ খুঁজতে লাগাতে হবে। এটা হলো আপনার খাটুনি আর আপনার টাকাকে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ানো।
কাজের কথা: যদি আপনি কোনও ছোটখাটো কাজ বা ব্যবসা শুরু করেন, তবে কথা দিন যে প্রথম ১-২ বছর আপনার লাভের অন্তত অর্ধেক টাকা আবার সেটার উন্নতির জন্য লাগাবেন। এই টাকার নিয়ম মানাটা আপনাকে তাড়াতাড়ি এগোতে সাহায্য করবে। এভাবে ভাবুন: প্রত্যেকটা টাকা যা আপনি আবার ব্যবসায় লাগাচ্ছেন, সেটা যেন আপনার আর্থিক স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে পাঠানো এক একটা ছোট সৈনিক।
মাঝপথে পাঠকের জন্য প্রশ্ন: এই তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার নিয়মগুলো সাধারণ ভাবনা থেকে বেশ আলাদা লাগতে পারে। এই মুহূর্তে কোন নিয়মটা আপনার সবচেয়ে কাজের মনে হচ্ছে, অথবা কোনটা আপনার কাছে সবচেয়ে কঠিন লাগছে? নিচের কমেন্টে আপনার ভাবনা জানান – আমি আপনার মতামত জানতে চাই!
সাধারণ ভুল যা আপনার তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার পথে বাধা দিতে পারে
তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তাটা খুব উত্তেজনার, কিন্তু এতে বিপদও আছে। এখানে কয়েকটা সাধারণ ভুল দেওয়া হলো যা আপনার উন্নতি আটকে দিতে পারে:
- ভুল ১: "তাড়াতাড়ি পয়সাওয়ালা হওয়ার" মিথ্যে আশার পিছনে ছোটা।
তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তা মানে তাড়াতাড়ি আর বুদ্ধি করে ধনী হওয়া, রাতারাতি বড়লোক হওয়ার কোনও জাদু বোতাম খুঁজে পাওয়া নয়। যারা কোনও আসল কাজ না করে, কোনও আসল জিনিস তৈরি না করে, বা কোনও ঝুঁকি না নিয়ে 엄청 (কোরিয়ান ভাষায় 'অসাধারণ') লাভের কথা বলে, তাদের থেকে সাবধান। আমি সবসময় বলি, যা শুনতে খুব ভালো লাগে, তা প্রায়শই সত্যি হয় না। আসল তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তায় অনেক প্রাথমিক খাটুনি, দক্ষতা বাড়ানো আর ভালো জিনিস তৈরি করা লাগে। - ভুল ২: হারার ভয় বা লেগে না থাকা।
শূন্য থেকে কিছু তৈরি করা – একটা ব্যবসা, একটা জিনিস, একটা পরিচিতি – স্বাভাবিকভাবেই কঠিন। আপনি অবশ্যই সমস্যায় পড়বেন। মনে সন্দেহ আসবে। অনেকে তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার একটা আইডিয়া চেষ্টা করে, বাধা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেই পুরনো ধীরগতির রাস্তার তথাকথিত নিরাপত্তায় ফিরে যায়। এমজে ডিমার্কো, যে লেখক এই বুদ্ধিটা ছড়িয়েছেন, তিনিও সফল হওয়ার আগে অনেকবার হেরেছিলেন। মুশকিলের সময়েও লেগে থাকা হলো একজন তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার লোকের পরিচয়। - ভুল ৩: শুধু টাকার পিছনে ছোটা, লোকের দরকার বা ভালো জিনিসের দিকে নজর না দেওয়া।
অনেকেই এই ফাঁদে পা দেয় যে তারা শুধু "প্যাসিভ ইনকাম" করার জন্য একটা ব্যবসা বা জিনিস তৈরি করার চেষ্টা করে, কিন্তু তারা কোন আসল সমস্যার সমাধান করছে বা কোন আসল দরকার মেটাচ্ছে সেদিকে ভালো করে নজর দেয় না। তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তায় আপনার আয় হলো আপনি বাজারে যে ভালো জিনিসটা দিচ্ছেন তার ফল। অন্যদের খুব ভালোভাবে সাহায্য করার উপর জোর দিন, টাকা আপনাআপনিই আসবে।
শেষ কথা
আপনার ২০ বা ৩০ বছর বয়সেই অনেক টাকার মালিক হওয়ার স্বপ্ন শুধু "কিছু ভাগ্যবান" বা বড়লোকের ছেলেমেয়েদের জন্য নয়। এটা প্রায়শই সেই পুরনো, ভিড়ে ঠাসা, ধীরগতির রাস্তা ছেড়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার নিয়মগুলো মেনে চলার একটা পাকা সিদ্ধান্তের ফল। এর জন্য আপনার টাকা, সময়, কাজ আর জিনিসের দাম সম্পর্কে আপনার চিন্তাভাবনায় একটা বড় পরিবর্তন আনা দরকার। এটা হলো সিস্টেম তৈরি করা, সবকিছু নিজের হাতে নেওয়া আর নিজে কিছু তৈরি করার ব্যাপার।
হ্যাঁ, এর জন্য সাহস লাগে, খুব খাটতে হয় (বিশেষ করে শুরুতে), আর শেখার ও নিজেকে বদলানোর ইচ্ছা লাগে। কিন্তু এর লাভ? আর্থিক স্বাধীনতা, নিজের পছন্দমতো চলার আর দশের উপকার করার জীবন, আপনার নিজের শর্তে, যা আপনি হয়তো ভাবতেও পারেননি তার চেয়ে অনেক আগে।
ধীরগতির রাস্তা ছেড়ে নিজের তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার সম্ভাবনা খুঁজে দেখতে তৈরি? এটাকে শুধু আরও একটা পড়া লেখা হতে দেবেন না। আজই শুরু করুন! এই সপ্তাহে তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার রাস্তার কোনও একটা নিয়মের সাথে মেলে এমন একটা নির্দিষ্ট কাজ ঠিক করুন যা আপনি করতে পারেন। আপনি কি আপনার সময়ের হিসেব করবেন? একটা নিজে নিজে বাড়তে পারে এমন ব্যবসার আইডিয়া ভাববেন? একটা খুব দামি কিছু শিখতে শুরু করবেন?
নিচের কমেন্টে আপনার শপথটা জানান – সেই একটা কাজ কী হবে যা আপনি করবেন? এটাই হোক সেই মুহূর্ত যখন আপনি তাড়াতাড়ি আর্থিক স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে মন দিয়ে সেটা তৈরি করতে শুরু করবেন। আপনার ভবিষ্যতের আপনি আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে।